“আপা! ভালা আছেন?”
চমকে মাথা তুলে তাকায় তুলি। আজকে তার গণিত পরীক্ষা। অংক কষতে তার যতই ভালো লাগুক, পরীক্ষার হলে গিয়ে যোগের বদলে বিয়োগ, আর ভাগের বদলে গুণ করে অংক ভুল করার এত বেশী রেকর্ড করে ফেলেছে যে গণিত পরীক্ষাকে এখন সে ভয় পায় সবচে বেশী। বেশ অন্য মনস্ক হয়েই মাথা নিচু করে হাঁটছিল সে। আনমনেই অভ্যাসবসত স্কুলের গেটে বসা ভিক্ষুককে দুইটা টাকা দিয়ে ফেলে গেটের ভিতরে ঢুকতে যাবে, তখন কানে এলো এটা...read more
চৈত্রের এক অলস দুপুরে খাটে উপুর হয়ে শুয়ে জানালার কাছের আম গাছের মুকুল কটা এলো সেটা গুনছিল মেয়েটা। কালকে তার পরীক্ষা শেষ, এরপর বেশ অনেক দিনের লম্বা একটা ছুটি পাবে সে। বহু আকাঙ্ক্ষিত ছুটি এটা। গত একটা বছর নাক মুখ গুঁজে পড়তে পড়তে হাপিয়ে গেছে সে। বাসা থেকে একদম কড়া নজরদারী চলেছে, যাতে একটুও ফাঁকি সে না দিতে পারে ...read more
অধর বাবু দোকানের হিসাবের বই এর হিসাব চুকিয়ে, বাতি নিভিয়ে, দোকানের শাটার যখন লাগালেন, তখন দোকানের ঘড়িতে রাত তিনটা বেজে গেছে। অধর বাবুর বাসায় সেদিন মঙ্গল চন্ডীর পূজা ছিল। সেখানে দোকানের কর্মচারীদের নিমন্ত্রণ ছিল। তাদের সাথে বাসায় গিয়ে পূজার কর্তব্য পালন করে একলাই ফিরেছিলেন দোকানের হিসাব মিটাতে। কর্মচারীদের সেদিনের জন্য ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন। কদিন আগেই ছোট ঈদের জন্য মাস ব্যাপী অনেক বিক্রি বাট্টা হয়েছে, রমজানের শেষের কয় রাত দোকানেই থাকতে হয়েছে কর্মচারীদের ...read more
প্রবল ঝড় ঝাপ্টার মধ্যে কাক ভিজা হয়ে বাড়ি ফিরলেন শৈলেন বাবু। মেঘের গায়ে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে অনবরত, মধ্যরাতের গাঢ় অন্ধকারকে ঘুচে দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। বিদ্যুতের তীব্র ঝলকানিতে মুহূর্তের জন্য যেন রাতকে ঝকঝকে দিন বলে ভ্রম হয়। আর পর মুহূর্তেই বিকট বজ্রপাতের শব্দে সমগ্র পৃথিবী যেন কেঁপে উঠছে। মনে হচ্ছে, এই বুঝি মহা প্রলয় এল, সৃষ্টির বিনাশ এই রাতেই হবে। তাও, এই ঘোর অন্ধকারে বিদ্যুতের আলোতেই কোন ক্রমে পথ দেখে বাসায় ফিরতে পারলেন শৈলেন বাবু। বাতাসের তোড়ে ছাতাটাও গেছে ভেঙ্গে। দেখে মনে হচ্ছে না একে আর সারাই করে সারিয়ে তোলা সম্ভব ...read more
দূর্গামোহন চৌধুরীদের শহরের একদম কেন্দ্রে বিশাল পরিমাণ জায়গা। জমিদারের বংশধর চৌধুরীরা। খেটে বড় হওয়া রাম, ঘরে বসে খাওয়া রাম, এবং সব বেচে উদ্ধার হওয়া রামের বংশের শেষে এসে সেই বিশাল সম্পত্তির যে সামান্য অংশ বিশেষ চৌধুরীদের আছে, সেটাই থাকার ভাগ্য আজকাল খুব কম মানুষের থাকে। দূর্গামোহন বাবু বিচক্ষণ মানুষ, জমিদারীর জাতাভ্যিমান তার কোন কালেই খুব বেশী ছিল না। ব্যবসায় মাথা তাঁর বরাবরই ভালো ছিল। তাই সেই জমির সামনের দিকে সাড় করে গড়ে তুললেন বিপণি বিতান, আর পিছনে নিজেদের বসত ভিটা বানালেন ...read more