প্রবল ঝড় ঝাপ্টার মধ্যে কাক ভিজা হয়ে বাড়ি ফিরলেন শৈলেন বাবু। মেঘের গায়ে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে অনবরত, মধ্যরাতের গাঢ় অন্ধকারকে ঘুচে দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। বিদ্যুতের তীব্র ঝলকানিতে মুহূর্তের জন্য যেন রাতকে ঝকঝকে দিন বলে ভ্রম হয়। আর পর মুহূর্তেই বিকট বজ্রপাতের শব্দে সমগ্র পৃথিবী যেন কেঁপে উঠছে। মনে হচ্ছে, এই বুঝি মহা প্রলয় এল, সৃষ্টির বিনাশ এই রাতেই হবে। তাও, এই ঘোর অন্ধকারে বিদ্যুতের আলোতেই কোন ক্রমে পথ দেখে বাসায় ফিরতে পারলেন শৈলেন বাবু। বাতাসের তোড়ে ছাতাটাও গেছে ভেঙ্গে। দেখে মনে হচ্ছে না একে আর সারাই করে সারিয়ে তোলা সম্ভব, এইবার বুঝি একে বিদেয় করতেই হবে। ১৫ বৎসরের পুরোনো ছাতা, কত জল-রোদ থেকে বাঁচিয়েছে শৈলেন বাবুকে। কিন্তু আজ আর শেষ রক্ষা হল না। শৈলেন বাবুরো পোড়া কপাল, রাস্তায় এক খানা দোকান পর্যন্ত খোলা পেলেন না একটু মাথা গুঁজবার জন্য। অবশ্য দোকানেরই বা কি দোষ, এই মফস্বল শহরে আটটা বাজতে না বাজতে সবই বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণের চলাচল যায় কমে। সেখানে শৈলেন বাবুর গাড়ি এসে স্টেশনে এসে যখন পৌঁচাল, তখন রাত বাজে সাড়ে এগারোটার একটু বেশী। অথচ শৈলেন বাবুর ফেরার কথা ছিল বিকাল বেলায়। তো এদেশে কবেই বা গাড়ি ঠিক সময় ছাড়ল, আর ঠিক সময় পৌঁছাল! পাঁচ ঘন্টা লেটে নিজ শহরে যখন এসে পৌঁছেছেন, তখন আকাশে একটা তারাও দেখা যাচ্ছে না। কালরাত্রির মত অন্ধকার নেমে এসেছে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে, চারিদিক নিস্তব্ধ। স্টেশনেও রাতটা কাটিয়ে দিলে হত, কিন্তু শৈলেন বাবুর আর তর সইল না। দুইদিন ঘরের বাইরে থেকে একটু ঘরে এসে নিজের চৌকিতে গা এলিয়ে দেওয়ার জন্য মনটা বড্ড ছটফট করছিল তাঁর। ভাবলেন, স্টেশনে তো রাতভরই মানুষ যাতায়াত করে, একটা রিক্সা অথবা টেম্পু জুটে যেতেও পারে। কিন্তু আপদ বিপদের পিছে পিছেই জোটে কিনা, স্টেশনে একটা রিক্সাও জুটাতে পারলেন না। শৈলেন বাবু ভাবলেন, স্টেশনের মাথায় বড় রাস্তায় হয়তো কিছু মিলে যেতেও পারে। এই ভেবে ব্যাগটা এক হাতে ঝুলিয়ে আর ছাতাটা অন্য হাতে নিয়ে স্টেশন ছাড়লেন তিনি। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটা রিক্সা তার চোখে পরেছিলও বটে। কিন্তু রিক্সাওয়ালা তখন বাড়ির দিকে যাচ্ছে, শৈলেন বাবুর বাসাটা ওইদিকে পরে না বলে যেতে রাজি হল না। ধীরে ধীরে বাতাসের বেগ বাড়ছিল। শৈলেন বাবু মনে মনে প্রমাদ গুনলেন। এদিকে রিক্সার খোঁজে হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূর চলে এসেছেন দেখে ঠিক করলেন, জোরসেই হাঁটা দিবেন। বৃষ্টি হয়তো ধরে ফেলবে বাড়ি যেতে যেতে, কিন্তু গিয়ে গা মুছে নিলেই তো হয়ে যায়। হাতের পাতলা ব্যাগে খুব দরকারী কিছু নেই, ভিজলেও কিছু যায় আসবে না, আর ছাতা তো আছেই। ততক্ষণে হাল্কা হাল্কা বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। বাতাসো বেশ জোরসে বইছে। শৈলেন বাবু ছাতা খুলে হাঁটতে লাগলেন। মুহূর্তের মধ্যেই বাতাসের বেগ বেড়ে গেল ভয়ানক। সেই বেগে ছাতাটা কেমন ধপ করে উলটে গেল, কাঁটা গুলো কঞ্চের মত পট পট করে গেল ভেঙ্গে। “ধুচ্ছাই” বলে একবার ভেবেছিলেন ফেলে দিবেন ছাতাটাকে, কিন্তু কি মনে করে আর ফেললেন না। কোন ক্রমে তা গুটিয়ে বগলের তলায় নিয়ে ছুট লাগালেন। বেশীদূর এগোতে পারলেন না, এরই মধ্যে নেমে গেল মুষল ধারে বৃষ্টি। অন্ধকার, ঝড়-জলে মিলে সামনে কিছুই যেন চোখে পড়ছে না। আবছা আলোয় রাস্তা দেখে আন্দাজ করলেন, বাসার পথ খুব একটা বাকি নেই। অতএব বুকে বল বেঁধে আগাতে থাকলেন। এমন সময় সারা দুনিয়া আলো করে কড়াৎ করে বাজ পড়ল। সেই আলোয় দেখলেন, রাস্তার বাঁয়েই রাজবাড়ির দেয়ালের ফাটল। শৈলেন বাবুর বাসাটা রাজবাড়ির ঠিক উল্টো দিকেই, এই ফাটল দিয়ে যে মেঠো পথটা গেছে, তা ধরে হাঁটতে পারলে বাসার দূরত্ব অর্ধেক হয়ে যায়। তাই শৈলেন বাবু ঠিক করলেন, এই পথটা ধরাই প্রশস্ত। যেমন চিন্তা, তেমন কাজ। বিদ্যুতের আলোয় আন্দাজ করে করে বাসায় চলে এলেন শৈলেন বাবু। মাঝে অবশ্য রাজবাড়ির মাঠের এক কোণের একটা তাল গাছে কড়াৎ করে বাজ পরেছিল। শৈলেন বাবুর তো মনে হয়েছিল তালে গাছে নয়, তার মাথায় বুঝি সেই বাজ পরেছে। বিকট শব্দে কানে তালা লেগে গিয়েছিল তার। বাসায় ঢুকেও উনার বোধ হল, কানটার ভিতর সেই শব্দের রেশ রয়ে গেছে। কিছুক্ষণ হাত দিয়ে কানে আলতো করে থাবা দিলেন। একটু ভালো লাগছে বলে মনে হল তাঁর। এরপর তড়িঘড়ি বাথরুমে ছুটে গেলেন। ভিজে জামা কাপড় গুলো বালতিতে ফেলে একটু পরিষ্কার জলে স্নান করে নিলেন। এরপর একসেট শুকনো জামা পরে নিজের ঘরে এলেন। ঘড়িতে দেখলেন, রাত বাজে ১২ টা দশ। সময় কিন্তু বেশী কাটেনি। অথচ, শৈলেন বাবুর মনে হচ্ছিল, উনি যেন অনন্ত কাল ধরে সেই ঝড়ের মধ্যে হাঁটছেন। উনার ঘরের বিছানার উলটো দিকের কাঁচের জানালা দিয়ে রাজবাড়ির মাঠের গাছ গুলো দেখা যায়। বিদ্যুতের চমকে দেখতে পেলেন, হাওয়ায় গাছ গুলো পাগলের মত দুলছে। ভাবতেই অবাক লাগে, একটু আগেও এই বিভীষিকার ঠিক মাঝখানে ছিলেন শৈলেন বাবু। মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। আবার বিদ্যুতের চমকে শৈলেন বাবুর চোখে পড়ল রাজবাড়ির তাল গাছের সাড়ি। ঠিক ঠিকই একটা তাল গাছের মাথা হাওয়া, বোঝাই যাচ্ছে, ওটার উপরই বাজটা পড়েছিল। আবার বিদ্যুতের আলোয় যেন মনে হল, সেই তাল গাছের মাথায় বিশাল এক পাখি ডানা ঝাপটাচ্ছে। শৈলেন বাবুর মনে হল, এ যেন তার চোখের বিভ্রম। তাও এক দুর্নিবার আগ্রহ তাকে পেয়ে বসল। বিছানা ছেড়ে উঠে জানালার পাশে রাখা চেয়ারে বসলেন তিনি। বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না তাকে, শীগ্রিই গগন বিদারী বিদ্যুতের চমকে উনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন, সেই বজ্রাঘাতে মরে যাওয়া গাছটার মাথায় বসে আছে একটা শকুন।
এই শহরে শেষ শকুন দেখা গিয়েছিল প্রায় ২০ বৎসর আগে। প্রাচীন কালে পল্লী গায়ে গরু মরলে তা তখন ঘটা করে মাটি দেওয়া হত না, শকুনের আহারের অভাবও তেমন ছিল না। কিন্তু মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ল, ফলে লোকালয়ে মৃত প্রাণীর দেহ পরে থাকার ঘটনাও বিরল থেকে বিরলতর হতে লাগল। ফলে ধীরে ধীরে আহার আর বাসস্থানের অভাবে শকুন গুলো উধাও হয়ে গেল। শৈলেন বাবু একটু কবি কবি মানুষ। প্রকৃতির নানান বিচিত্র বিষয়াবলীর প্রতি উনার আকর্ষণ আজন্ম। তাই তার মনে সেই হারিয়ে যাওয়া শকুন গুলোর প্রতি কিছুটা মায়া জন্মেছিল। অবশ্য এই বলে তো আর এনথ্রাক্সে মরা গরুকে কেউ নদীর ধারে ফেলে রাখবে না। তাই শকুন গুলোও আর ফিরে এলো না। শুধু কি শকুন? নদীতে শুশুক চোখে পরে না, প্যাঁচাও চোখে পরে হঠাৎ সঠাৎ, গন্ধ গোকুলের গন্ধ পাননা আজ বহুদিন। শহরে শুধু কাক আর মানুষ, অন্যদের কোন জায়গা নেই এখানে।
তাই শৈলেন বাবুর একটু খুশী খুশীই লাগল, অনেক দিন পর শহরে শকুন এসেছে। ভাবলেন, কালকে সকাল হলে রাজবাড়িতে গিয়ে একটু কাছ থেকে দেখবেন শকুনটাকে।
সকাল বেলা যখন শৈলেন বাবুর ঘুম ভাঙল, তখন বৈশাখের ঝক ঝকে রোদে উনার সারাটা ঘর ভরে গেছে। গত রাতের বিভীষিকার চিহ্নমাত্র যেন নেই। অবশ্য, বাসার বাইরে ভাঙা গাছের ডাল আর ঝরা পাতার পাহাড়েই সেই ভ্রম দূর হয়। ওদিকে কাদের বাড়ির টিনের চাল উড়ে গেছে, সবাই খুব হট্টোগোল করছে। তবে, আর যাই হোক, শৈলেন বাবুর ঘুমটা কিন্তু ভীষণ ভালো হয়েছে। বাসার বাইরে থাকলে উনার ভারী ঘুমের ব্যাঘাত হয়। গত দুই রাত ভালো করে দুই চোখের পাতা এক করতে পারেন নি তিনি। গাঢ় ঘুম থেকে উঠে খুব চাঙ্গা বোধ করতে লাগলেন। রাজবাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন, তালের সারির মধ্যে একটি তাল গাছ মরে আছে। বাজ পড়ে তা কালো হয়ে গেছে। কোন শকুন উনার চোখে পরল না। বিছানা ছেড়ে, দাঁত মেজে, দাড়ি কামিয়ে, দুটো চিড়া-দই খেয়ে শৈলেন বাবু প্রস্তুত হলেন রাজবাড়ি যাওয়ার জন্য। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দেখলেন, দরজার কাছে ছাতাটা পরে আছে। হাতে নিয়ে উলটে পালটে দেখলেন সেটা। সেটার গায়ে অনেক পাতা, মাটি আর ছোট ছোট ডাল আটকে আছে। খুলে পরখ করে বুঝলেন, এই ছাতাকে সারাই করার আসলেই আর কোন উপায় নেই। শৈলেন বাবুর গত রাতের জামা, জূতা আর ব্যাগও একইরকম মাটি, পাতা, আর ছোট ছোট ডালে নোংরা হয়ে ছিল। শৈলেন বাবু ঠিক করলেন, রাজবাড়ি থেকে ঘুরে এসে সেগুলো পরিষ্কার করবেন তিনি। তবে, মনে একটা কেমন খটকা লাগছিল। জামায় আর ব্যাগে পাতা আর ডালগুলো মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু এত মাটি এলো কোথা থেকে। কাল রাতে রাস্তায় কোথাও পরে গেছিলেন বলে তো উনার মনে পরে না। যাক গে, মাটিই তো, ধূলেই চলে যাবে, ভেবে শৈলেন বাবু বাসার বাইরে পা বাড়ালেন। তাল গাছের ডগায় কোন শকুন সকাল থেকে চোখে পড়ে নি। তাই উনি বের হওয়ার তাগাদাটা একটু বেশীই বোধ করছিলেন। কি জানি, হয়তো রাতে ক্লান্ত চোখে তার মতিভ্রম হয়েছিল। সেটাই স্বাভাবিক নয় কি? এত ঝড়ের মধ্যে সদ্য পোড়া গাছে শকুন আসবে কোথা থেকে? তাও চক্ষু কর্ণের বিভাদ ভঞ্জন করার জন্য শৈলেন বাবু রাজবাড়ির দিকে এগুলেন। যে পথ ধরে কালকে রাতে উনি বাড়ি ফিরেছিলেন, সেই পথেই হাঁটতে থাকলেন উনি। জলে কাঁদায় সে পথে হাঁটা একটু মুশকিল, তাও খুব একটা সমস্যা হল না। খানিকটা দূরে, পথের একটু পাশে রোদের আলোয় কি যেন চক চক করছিল। ভালো করে লক্ষ্য করে শৈলেন বাবু দেখলেন, সেটা একটা টিনের চালা। নির্ঘাৎ এই সেই চালা যার জন্য পাশের বাড়িতে এত হৈ হট্টগোল হচ্ছে। চালার আরেকটু কাছে গিয়ে দেখতে পেলেন, একটা পাখি সেই চালার নিচ থেকে কি যেন খুটিয়ে খুটিয়ে খাচ্ছে। দূর থেকে পাখিটাকে দেখে শৈলেন বাবুর হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। দেখতে অবিকল শকুনের মত না পাখিটা? ন্যাড়া মাথা, বিশাল ডানা ঝাপটে এদিক থেকে ওদিকে লাফাচ্ছে। একটু কাছে গিয়ে দেখলেন, আসলেই সেটা একটা শকুন। শৈলেন বাবুর মন এক নির্মল আনন্দে ভরে গেল। যাক, একটা প্রজাতি তো এখনো এই দেশে টিকে আছে, মানুষের এত আগ্রাসনের পরেও। এরপর, উনার একটু কৌতূহল হল, পাখিটা খাচ্ছে কি? টিনের চালে চাপা পড়ে কি কোন কুকুর-বিড়াল মরল? প্রবল আগ্রহে ধীরে ধীরে শৈলেন বাবু এগোলেন, অতি সাবধানে যেন পাখিটা ভয় পেয়ে পালিয়ে না যায়। একটু এগিয়ে যেতেই উনার চোখে পরল, টিনের চালার এক কোণা থেকে একটা হাত বের হয়ে আছে, মানুষের হাত। চমকে উঠলেন শৈলেন বাবু। সাবধানতা ভুলে গিয়ে দ্রুত এগিয়ে গেলেন সেদিকে। কিন্তু তাতে সেই পাখির যেন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, আপন মনে ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছে সে। শৈলেন বাবু হাত দিয়ে তাড়া দিলেন শকুনটাকে। কিন্তু সেই পাখি তাকে গ্রাহ্যই করল না। ভীষণ ভয়ে শৈলেন বাবু দেখলেন, একটা মানুষ টিনের চালের নিচে উবু হয়ে পরে আছে, আর শকুনটা সেই মানুষের গাল ঠোকারাচ্ছে। শকুনের তীক্ষ্ম চঞ্চুতে লেগে আছে ইষৎ কালচে রক্ত। আবার তাড়ানোর চেষ্টা করলেন তিনি পাখিটাকে, কিন্তু সেই পাখিটা তার এতে ভ্রুক্ষেপ ও করল না। যেন পাখিটার কাছে শৈলেন বাবুর কোন অস্তিত্বই নেই। শৈলেন বাবু সেই নিহত মানুষটার পিঠের দিকটাই দেখতে পাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার মনে হল, আরে, এই ফতুয়াটাতো উনার আছে। হ্যাঁ, ঠিক এই ফতুয়াটাই, কালকে রাতেই তো এটা পরেই বাসায় ফিরলেন তিনি। অবশ্য, খুব সাধারণ এই ফতুয়া, কাপড়টাও বেশ পরিচিত, আরেকজনের হুবহু এমন ফতুয়া থাকাটা খুব একটা অস্বাভাবিক কি! শৈলেন বাবুর ভারী মায়া হল লোকটার জন্য। একই ঝড়ের রাতে, একই রাস্তা দুইজন ধরেছিলেন, এর মধ্যে একজনের কি করুণ পরিণতি! নাহ, আর দেরী না করে পুলিশ ডাকা দরকার, এই হতভাগ্যের পরিবারকে জানানো দরকার তার নির্মম পরিণতির খবর। কিন্তু তার আগে তাড়ানো দরকার এই শকুনকে, নিহতের দেহকে ক্ষত বিক্ষত করে চলেছে এই পাখি। আরো কাছে গিয়ে হুশ হুশ করে পাখিটাকে তাড়া করলেন শৈলেন বাবু। এইবার যেন পাখিটা একটু সরে দাঁড়ালো। পাখিটা তার বিশাল বপু দিয়ে লোকটার মুখ আড়াল করে রেখেছিল। এতক্ষণে পাখিটা সরলে শৈলেন বাবু নিহতের মুখ দেখতে পেলেন। এবং যা দেখলেন, তার কোন ব্যাখ্যা হয় না।
কারণ, গালের মাংসহীন দাঁত বার করা বিভৎস সেই চেহারা নিয়ে শৈলেন বাবুর দিকে অপলক দৃষ্টিতে যে তাকিয়ে ছিল, সে শৈলেন বাবুর লাশ।
১২/০৩/২০২০
কলেজ স্টেশন